আজ সোমবার, ১৮ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৩রা মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

দায়িত্ব পালনে জোড়ালো ভূমিকা নেই স্বেচ্ছাসেবক দলের!

সংবাদচর্চা রিপোর্ট:
রাজপথে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির শক্তির অন্যতম পরিচয় দেয়ার ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাসেবক দলের গুরুত্ব অনেক। জেলা ছাত্রদল, যুবদলের কমিটি ঘোষণার পর তাদের রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম সহ দলের প্রয়োজনে সভা, সমাবেশ, অনশন, মানববন্ধন ছাড়াও অনেক ভূমিকা রাখতে দেখা গেছে। যদিও এর কোনটিই সরকারের ওপর তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি। তবে জেলা ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দল ঘোষণার প্রায় এক বছর অতিবাহিত হয়ে গেলেও এখানো পর্যন্ত তাদের রাজপথের আন্দোলন সংগ্রাম তেমনভাবে লক্ষ্য করা যায়নি। বিগত আন্দোলনগুলোতে এই সংগঠনটির জোড়ালো কোন ভূমিকা নেই বললেই চলে । যদিও তাদের দাবী, তারা কেন্দ্রের ঘোষণা অনুযায়ী সবসময় দায়িত্ব পালন করে থাকেন। অথচ দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ১৪ মাস যাবৎ কারাগারে আছেন।

নারায়ণগঞ্জ বিএনপি’র নেতাকর্মীদের ভাষ্য অনুযায়ী তারা সবসময়ই রাজপথে নেত্রীর মুক্তির দাবীতে আন্দোলন সংগ্রাম করে থাকে। কেন্দ্র ঘোষিত কমিটি হওয়ার পর দাবী আদায়ে আন্দোলন সংগ্রাম না করাটা ওই কমিটির নেতাকর্মীদের ব্যর্থতা। সেই সাথে নেত্রীর মুক্তির দাবীতে যদি রাজপথে তারা আন্দোলন সংগ্রাম করেই থাকে তাহলে তাদের নেত্রী এখনো জেলে কেনো? মুখে মুখে আন্দোলন করে কখনোই দাবী আদায় করা সম্ভব নয়। দাবী আদায় করতে হলে বাস্তব আন্দোলন করতে হবে। অনেকেই মনে করেন রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামে আপনাদের স্বেচ্ছসেবক দলের জোড়ালো কোন ভূমিকা নেই। এ বিষয়ে একটি মন্তব্যে জানতে চেয়ে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আনোয়ার সাদাত সায়েমকে মুঠোফোন করা হলে তিনি দৈনিক সংবাদচর্চার প্রতিবেদককে বলেন, এটা সম্পূর্ন মিথ্যা চিন্তা-ভাবনা। কারণ কেন্দ্র থেকে যখন যেভাবে নির্দেশনা দেয়া হয় আমাদের স্বেচ্ছসেবক দল সেভাবেই কাজ করে। আমরা কখনোই দায়িত্ব পালনে অবহেলা করিনা। আমরা পূর্বেও রাজপথে ছিলাম এবং ভবিষ্যতেও থাকবো। তাছাড়া ভবিষ্যতে কেন্দ্র থেকে যেভাবে নির্দেশনা দেয়া হবে আমরা সেভাবেই আমাদের দায়িত্ব পালন করবো।

একই প্রশ্ন করে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুর রহমানকে মুঠোফোন করা হলে তিনি বলেন, আমাদের স্বেচ্ছাসেবক দল কেন্দ্রীয় সংসদের নির্দেশে আমরা বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করেছি। সেই সাথে কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী বিভিন্ন সময় স্বেচ্ছাসেবক দলের পক্ষ থেকে সভা, সমাবেশ, অনশন, মানববন্ধন ও র‌্যালী করেছি। কেন্দ্রের থেকে যখন যেভাবে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে সেভাবেই আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করেছি। আমরা পূর্বের মতো সবসময় প্রস্তুত আছি। আমরা কখনোই পিছপা হবো না। নেত্রীর মুক্তির দাবীতে আমাদের আন্দোলন চলছে, চলবে।

আপনাদের স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের ভাষ্য যে আপনারা সবসময় রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করেন তাহলে এখনো কেনো আপনাদের নেত্রী কারাগারে? এমন প্রশ্ন করে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আবুল কাওসার আশাকে মুঠোফোন করা হলে তিনি সাথে সাথে উল্টো প্রশ্ন করেন দৈনিক সংবাদচর্চার প্রতিবেদককে। তিনি বলেন, আপনাদের (সাংবাদিক) যদি জোড়ালো ভূমিকা থাকতো তাহলে কেনো সাগর-রুনী হত্যার বিচার এখনো হয় নি। আপনার জিনিসটা বুঝতে হবে। বর্তমানে সারা দেশটাই তো একটা জিম্মি অবস্থাতে আছে। এখানে আপনার (প্রতিবেদক) যে অবস্থা, আমি রাজনীকি করি আমারও ঠিক একি অবস্থা। তিনি আরও প্রশ্ন করেন, আপনি কি আগের মতো লিখতে পারেন? সবাই একই অবস্থার মধ্যে আছে। এই জিম্মি জায়গাটা থেকে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে বের হয়ে আসতে হবে।

তিনি বলেন, কেন্দ্রের নির্দেশনা পালনে আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি। সেই সাথে আমাদের এই চেষ্টা ভবিষ্যতেও অব্যহত থাকবে।

এদিকে সচেতন মহলের মতে, শুধু স্বেচ্ছাসেবক দলের আন্দোলন তাদের নেত্রীর মুক্তির জন্য যথেষ্ট নয়। ব্যর্থতা শুধু স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের নয় বরং পুরো নারায়ণগঞ্জ বিএনপির। তবে এটা ঠিক যে নারায়ণগঞ্জ অন্যান্য সংগঠনগুলোর চেয়ে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের রাজপথে একটু কম দেখা যায়। তবে তাদের নেত্রীর মুক্তি দাবী জানাতে হলে রাজপথ কাপাঁতে হলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তাহলেই তাদের অধিকার আদায় করা সম্ভব।